ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় যতই ডমরুধরকে দিয়ে সর্বগ্রাসী কুমির এবং তাকে ধরা নিয়ে সরস ‘কুম্ভীর–বিভ্রাট’–‌এর কাহিনি ফাঁদেন। আসলে বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় নদী থেকে কুমির ধরা নয়, নদীতে কুমির ছাড়াও খুব জরুরি। সেই কারণেই সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সোমবার ৩৫টি কুমির ছাড়া হল পাথরপ্রতিমার লুথিয়ান অভয়ারণ্যের কাছে, কলমি নদী ও ভাইজোড়া খালের সংযোগস্থলে। এর মধ্যে তিনটি পুরুষ ও ৩২টি স্ত্রী কুমির। কুমিরগুলির বয়স চার বছরের কাছাকাছি। দৈর্ঘ্য গড়ে চার ফুট। এর মধ্যে চারটি অ্যালবিনো প্রজাতির। কুমির ছাড়ার অনুষ্ঠানে ছিলেন ডিএফও মিলন মণ্ডল ও এডিএফও অনুরাগ চৌধুরি। এই কুমিরগুলি ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে বড় করা হয়েছে। গত বছর ৫৫টি কুমির ছাড়া হয়েছিল। এগুলি নোনাজলের। এই প্রজাতির কুমির সুন্দরবনেই বেশি দেখা যায়। এরা মোটেও যাত্রীসমেত নৌকো খেয়ে ফেলে না। খাবার হিসাবে মরা মাছ ও পশুর মাংসই ওদের পছন্দ। ফলে নদীতে ভেসে–আসা পশুর দেহ খেয়ে নেয়। নদী পরিষ্কার থাকে। এছাড়া কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধিও অন্যতম লক্ষ্য। ১৯৭৬ সালে কুমিরের সংরক্ষণ ও প্রজননের লক্ষ্যে ভগবতপুরে গড়ে তোলা হয়েছিল কুমির প্রকল্প। এখানে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর ব্যবস্থা আছে। ডিএফও মিলন মণ্ডল জানান, প্রতি বছরই প্রকল্প থেকে কিছু কুমির নদীতে ছাড়া হয়। প্রজনন বৃদ্ধি ও বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কুমিরকে সুন্দরবনের নদীতে ছাড়া হল। এই কুমিরগুলির ওপর নজর রাখা হবে।