মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সমস্যা শুনেই এগিয়ে এলেন হাওড়া ব্রিজের ট্রাফিক গার্ডের ওসি সৌভিক চক্রবর্তী (Souvik Chakraborty)। শনিবারের সকাল, ঘড়িতে তখন ১১টা বেজে ২০ মিনিট। ব্যস্ত রাস্তায় কর্তব্যরত হাওড়া ব্রিজের ট্রাফিক গার্ডের ওসি। মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Examination) চলার কারণে ট্রাফিককে সম্পূর্ণভাবে সচল রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করে চলেছেন ট্রাফিক পুলিশ কর্মীরা। হঠাৎ থমকে দাঁড়ালেন ওসি। কানে ভেসে এল এক পরীক্ষার্থীর কান্না জড়ানো আর্তি। এগিয়ে গেলেন সৌভিক চক্রবর্তী। শুনলেন মেয়েটির সমস্যার কথা, আর তারপর যেটা করলেন সেটা বোধহয় সিনেমাতেই সম্ভব।

মাঝ রাস্তায় কাঁদতে কাঁদতে সাহায্যের জন্য আকুতি জানাচ্ছেন এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বিষয়টি চোখ এড়ালো না হাওড়া ব্রিজের ট্রাফিক গার্ডের (Howrah bridge traffic Guard) কর্তব্যরত ওসি সৌভিক চক্রবর্তীর (OC Souvik Chakraborty)।সে সময় স্ট্র্যান্ড রোডের কাছে রাজা কাটরা এলাকায় ডিউটি করছিলেন তিনি। শ্রীজৈন বালিকা বিদ্যালয়ের (Shree Jain Girls School) ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন শনিবার মাধ্যমিকের ভূগোল পরীক্ষার দিনে মেয়েটির ঠাকুরদার শেষকৃত্য হচ্ছে। পরিবারের সদস্যেরা সেখানেই গেছেন। কিন্তু পড়ুয়া শ্যামবাজারে মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের পিছনে আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবার জন্য হাতে সময় নিয়ে বেরোলেও, মাঝ রাস্তায় বিপাকে পড়েছেন। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার তৃতীয় দিনে সময়মতো পৌঁছতে পারবে কিনা সেই আশঙ্কায় চোখ ভিজেছে তাঁর।

আরও পড়ুন- জাকির-সাকেতের হেনস্থা নিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর

এরপর আর বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করেননি ওসি। তিলোত্তমা দেখল মানবিক পুলিশের মর্মস্পর্শী মানসিকতাকে। ১২ টা থেকে পরীক্ষা শুরু, ১১টা ৪৫ মিনিটে প্রশ্নপত্র হাতে পাবে পড়ুয়ারা। ঘড়ির কাঁটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করলেন না ওসি সৌভিক চক্রবর্তী। তড়িঘড়ি কন্ট্রোল রুমে ফোন করে ওই এলাকায় গ্রিন করিডর করে ফেলেন। এরপর পুলিশের গাড়িতে বসিয়ে পরীক্ষার্থীকে ঠিক সাড়ে ১১টায় পৌঁছে দেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। এই প্রথম নয় এর আগেও সৌভিক চক্রবর্তী একাধিক মানবিক দায়িত্ব পালন করে পুলিশকে গর্বিত করেছেন। তিনি যে শুধু একজন ভালো পুলিশ আধিকারিক তাই নয়, পাশাপাশি ভালো মানুষ হওয়ার পরিচয়ও দিলেন ওসি। সৌভিক চক্রবর্তীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীও।